ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা বদলে যাওয়ার পর নানারকম দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলছেন অনেকে। ক্রীড়াঙ্গন নিয়েও বিভিন্ন কথা শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন সবকিছু পরিবর্তনের কথা। কেননা বোর্ডের দায়িত্বে থাকা একাধিক পরিচালক এবং কর্তাব্যক্তিরাই ছিলেন সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ। পদত্যাগ করে শেখ হাসিনার দেশ পালানোর পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন তারা। সেই সুবাদে উঠে আসছে বিসিবির গত দেড় দশকের অন্যায়-অনিয়মের অভিযোগ।
দীর্ঘ সময় নীরব থাকলেও আস্তে আস্তে ক্রিকেট বোর্ডের ওপর প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন জাতীয় দলের সাবেক-বর্তমান থেকে শুরু করে ক্রীড়া সংগঠকরাও। এরই মাঝে গত রোববার (১১ আগস্ট) মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সামনে ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল জানান, ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার ৯ মাস পার হতে চললেও এখন পর্যন্ত তার টাকা বুঝে পায়নি জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। যদিও টাকা পাওয়া না পাওয়া নিয়ে কিছু বলেনি ক্রিকেটাররা।
রোববার (১১ আগস্ট) গণমাধ্যমে কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা কি জানেন ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ হয়েছিল ভারতে। সেই ওয়ানডে বিশ্বকাপের টাকা আইসিসির সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের যে চুক্তি থাকে ৫০ দিনের মধ্যে টাকা দেয়ার কথা। এটা খেলোয়াড়দের মধ্যে বণ্টন হয়, সেই টাকা এখনো পর্যন্ত খেলোয়াড়দের দেয়া হয়নি। সেটি তো দেয়ইনি, সবশেষ (টি-টোয়েন্টি) বিশ্বকাপেরও ১৫ দিন চলে গেছে। এর আগেও (২০১৯ বিশ্বকাপের পর) এটি হয়েছে।
কোয়াব সাধারণ সম্পাদকের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন একটি গণমাধ্যমকে জানান, আইসিসি এখন পর্যন্ত টাকাই তো পাঠায়নি। টাকা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে পাঠানো হয়। শ্রীলঙ্কা যেমন গত মাসে পেয়েছে। ট্যাক্স ডিডাকশন, কিছু ফাইন্যান্সিয়াল কমপ্লায়েন্স আছে। প্রাইজমানি পেতে ওখানে (ভারতে) চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট ফার্ম পর্যন্ত নিয়োগ দিতে হয়েছে। আর্থিক লেনদেনের প্রক্রিয়া একেক দেশে একেকরকম। যাদের সঙ্গে প্রক্রিয়াটা মসৃণ সেসব সদস্য দেশ আগে টাকা পেয়েছে। যাদের একটু জটিল, তাদের এই প্রক্রিয়া মেনে পেতে হচ্ছে। এটার মানে এই নয় এটা ক্রিকেট বোর্ড আটকে রেখেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ বিশ্বকাপের মূল পর্বে অংশগ্রহণের জন্য ১ লাখ মার্কিন ডলার প্রাইজমানি পেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। দুই ম্যাচ জেতায় ৪০ হাজার করে আরও ৮০ হাজার মার্কিন ডলার বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার পাবেন সাকিব-শান্তরা, বাংলাদেশি মুদ্রায় যেটি প্রায় ২ কোটি টাকা।