25 C
Dhaka
Monday, December 23, 2024
[adinserter block="1"]

ভিক্ষা করে চলবে না দেশের মানুষ : প্রধানমন্ত্রী

কারও কাছে ভিক্ষা করে দেশের মানুষ চলবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (১৯ মে) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে জাতীয় এসএমই পণ্যমেলা-২০২৪ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমি কৃষির ওপর গুরুত্ব দেই, আলাদা বাজেট রাখি। সে সময় দেশকে প্রথম খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করি। ২০০৯ আবার ক্ষমতায় এসে দেখি খাদ্যসংকটে দেশ। এখানে নীতির ব্যাপারে একটা প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, আমি যেদিন সংসদে বলেছিলাম দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তখন বিরোধী দলের সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বলেছিলেন, স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে খাদ্য সাহায্য পাওয়া যাবে না। তখন আমি উঠে বললাম, কারও কাছে ভিক্ষা করে দেশের মানুষ চলবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ভিক্ষুক জাতির কোনো ইজ্জত থাকে না। আমরা সম্মান নিয়ে চলতে চাই। কারণ বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমার মাটি আছে, মানুষ আছে। এ সোনার মাটি আর মানুষ দিয়েই তো আমি সোনার বাংলা গড়ে তুলব।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি মানুষের উদ্যম এবং কর্মক্ষমতাকে যদি কাজে লাগাতে পারি তাহলে এ সোনার মানুষগুলোই সোনার বাংলা গড়ে তুলবে।

আরো পড়ুন  আমি জুলাই আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিলাম না: মাহফুজ আলম

সরকারপ্রধান বলেন, ২০০৯-২৩ এ বাংলাদেশ বদলে গেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। সেই জায়গা থেকে আরও সামনে এগিয়ে যেতে হবে। কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে, পাশাপাশি শিল্পায়ন করতে হবে। মানুষের উদ্যম কাজে লাগাতে পারলেই সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। এসএমই উদ্যোক্তারা একক বা যৌথভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে পারে। নারী-পুরুষকে সমানভাবে উদ্যোক্তা করতে পারলে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, শিল্পকে পরিবেশবান্ধব হতে হবে। শিল্পখাত একান্তভাবে পরিবেশবান্ধব হওয়া উচিত। যারা যেখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন, শিল্পের বর্জ্য যেন নদীতে না পড়ে। আমাদের পানি যেন কোনোভাবেই দূষিত না হয়। খরচ কমাতে গিয়ে দেশের ক্ষতি করবেন না। শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ, নিরাপত্তা নিশ্চিতেরও তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি বলেন, শুধু পণ্য উৎপাদন করলেই হবে না। পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে পণ্য বাজারজাতকরণের প্রতিও নজর দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মহামারি করোনার কারণে সব কাজ বন্ধ, রপ্তানি বন্ধ, আমদানি বন্ধ সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি এবং নানারকম সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশেও এ ধাক্কাটা এসে পড়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত আছে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের যুদ্ধ। বিদেশ থেকে যে পণ্যগুলো আমদানি করতে হয় তার প্রত্যেকটার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। যার একটা প্রভাব পড়েছে আমাদের দেশে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এটাকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি। এটা করতে পারব, যখন আমরা নিজস্ব উৎপাদন বাড়াতে পারব।

আরো পড়ুন  পল্লী বিদ্যুতে ৪০ হাজারের বেশি ছুটির আবেদন, ব্ল্যাকআউটের শঙ্কা

এ মেলা চলবে ২৫ মে পর্যন্ত। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

মেলায় তিন শতাধিক উদ্যোক্তা অংশ নেন। মেলায় প্রায় ৬০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তা।

এসএমই মেলায় ১০০ শতাংশ দেশীয় পণ্য প্রদর্শন করা হবে। এবারের মেলায় সাড়ে তিন শতাধিক কোম্পানি অংশগ্রহণ করবে।

একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ উপলক্ষে বেশকিছু ক্ষুদ্র, মাঝারি ও স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের হাতে ক্রেস্ট ও অ্যাক্রেডিটেশন সার্টিফিকেটসহ জাতীয় এসএমই পুরস্কার-২০২৩ হস্তান্তর করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মো. মাসুদুর রহমান।

আরো পড়ুন  জানা গেল বায়তুল মোকাররমের খতিবের অবস্থান

পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে স্বপ্না রানী সেন জাতীয় এসএমই পুরস্কার-২০২৩ জেতার অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

এবারের মেলায় পোশাক খাতের সবচেয়ে বেশি ৭৫টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে। এ ছাড়া ৪২টি প্রতিষ্ঠান পাটজাত পণ্য, ৩৮টি প্রতিষ্ঠান হস্তশিল্প, ৩২টি প্রতিষ্ঠান চামড়াজাত পণ্য এবং ২৭টি প্রতিষ্ঠান প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য প্রদর্শন করবে।

এ ছাড়াও ২৩টি লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, ১৪টি খাদ্যপণ্য, ১৩টি আইটিভিত্তিক পরিষেবা, ১২টি এসএমই ক্লাস্টার উদ্যোক্তা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মেলায় অংশ নেবে, ৫টি ভেষজ শিল্পের পণ্য এবং ৫টি প্রতিষ্ঠান গয়না পণ্য প্রদর্শন করবে।

৪টি স্টলে প্লাস্টিক পণ্য, ৩টি ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস সেক্টর, ৩টি আসবাবপত্র এবং ১৯টি বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করবে।

এ ছাড়া ৩০টি ব্যাংক, ১৫টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ক্লাব এবং প্রায় ৫০টি অন্যান্য প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশগ্রহণকারীদের সেবা প্রদান করবে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে ঢাকা ও চট্টগ্রামের এসএমই বিজনেস ইনকিউবেশন সেন্টারগুলো তাদের কার্যক্রম প্রদর্শন করবে।

উইন্ডি টাউন হলে সহজ অর্থায়ন, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন, প্রযুক্তি, আইসিটি এবং ক্লাস্টার উন্নয়ন বিষয়ে ৬টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

সর্বশেষ সংবাদ