আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ থেকে ইসরায়েলকে রেহাই দিতে এমন কোনো চেষ্টা নেই যা করতে বাকি রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও তেলআবিবের পক্ষ হয়ে লড়েছে ওয়াশিংটন। সর্বশেষ এমন দায় থেকে নেতানিয়াহুতে রক্ষা করতে গাজার সীমান্তবর্তী শহর রাফাহতে অভিযান চালাতে ইসরায়েলকে কঠোরভাবে নিষেধ করেছিল বাইডেন প্রশাসন। শুধু তাই নয় এর বিনিময়ে ইসরায়েলি এ নেতাকে দেওয়া হয়েছিল লোভনীয় প্রস্তাবও।
টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার সীমান্তবর্তী শহর রাফাহতে স্থল অভিযানের পরিকল্পনা বাদ দেওয়া হলে ইসরায়েলকে হামাস নেতাদের অবস্থান সম্পর্কে ‘গোয়েন্দা তথ্য’ সরবরাহ করবে যুক্তরাষ্ট্র। সংশ্লিষ্ট ৪টি সূত্রের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের বরাতে এমত তথ্য দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল যদি রাফাহতে সামরিক অভিযান স্থগিত করে, তাহলে তাদের গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রস্তাবে রাজি হলে ইসরায়েলকে হামাস নেতাদের গোপন আস্তানা ও গাজায় তাদের গোপন সুড়ঙ্গ নিয়ে তথ্য দিয়ে সহায়তা করবে ওয়াশিংটন।
এ সময়, ইসরায়েলের অব্যাহত হুমকির মুখে রাফাহ থেকে পালিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের জন্য বড় একটি আশ্রয়শিবির স্থাপনে সাহায্য করারও প্রস্তাব দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এ ছাড়া মানবিক ত্রাণসহায়তা দেওয়ার জন্য অবকাঠামো নির্মাণেও সাহায্য করবে তারা। বাইডেন প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ইসরায়েলের হামলার মুখে রাফায় প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছেন। ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে এর মধ্যে অন্তত আট লাখ ফিলিস্তিনি রাফাহ থেকে অন্যত্র না যাওয়া পর্যন্ত তাদের সেনারা রাফায় ঢুকবে না।
গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবির ব্রিফিংয়েও ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া এ প্রস্তাবের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যদিও ওই দিন মার্কিন এ কর্মকর্তা জানান যে এরই মধ্যে ইসরায়েলকে এ ধরনের গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছে ওয়াশিংটন। সম্প্রতি বাইডেন প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা টাইমস অব ইসরায়েলকে জানান, হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার রাফাহর কোনো গোপন আস্তানায় নেই। তিনি গাজার খান ইউনিস এলাকার ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গে আছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কয়েক মাস ধরেই গাজায় বড় ধরনের স্থল অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দিয়ে আসছেন। যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা মনে করে হামাসকে পরাজিত করতে এ অভিযান অপরিহার্য। হামাসের অবশিষ্ট ৬টি ব্যাটালিয়নের মধ্যে ৪টিই এখন রাফাহতে সক্রিয় বলে মনে করে ইসরায়েল।