বাড্ডা ফুজি টাওয়ারের সামনে সুমন সিকদারকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা চৌধুরি তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া আদাবরে পোশাক শ্রমিক রুবেল হত্যা মামলায় সাবেক এমপি সাদেক খান ও সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
তবে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রিমান্ড শুনানিতে কোটা সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম উল্লেখ করে আদালতকে বলেছেন, আমরা দুজনই (আমি ও সালমান এফ রহমান) কোটা আন্দোলনের পক্ষের ছিলাম। আমি নির্দোষ। ঘটনার বিষয় কিছুই জানি না। আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই।
এদিন সকাল ৭টায় তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বাড্ডা থানার মামলায় আনিসুল ও সালমান এবং আদাবর থানার সাদেক ও জিয়াউলকে দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সালমান-আনিসুল-সাদেক-জিয়াউল আবারও রিমান্ডে
গত ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক নিউমার্কেট থানার হত্যা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ২৪ আগস্ট লালবাগ ও নিউমার্কেট থানার পৃথক দুই হত্যা মামলায় তাদের আরও ১০ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়।
২৪ আগস্ট রাজধানীর নাখালপাড়া এলাকা থেকে সাদেক খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন মোহাম্মদপুর থানার হত্যা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। দ্বিতীয় দফায় তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হলো।
১৫ আগস্ট গভীর রাতে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকা থেকে জিয়াউল আহসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন নিউমার্কেট থানার একটি মামলায় তার ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর ২৪ আগস্ট লালবাগ ও নিউমার্কেট থানার পৃথক দুই হত্যা মামলায় পাঁচদিন করে তার আরও ১০ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই বাড্ডা ফুজি টাওয়ারের উত্তর পাশে প্রগতি সরণি রাস্তার ওপর গুলিতে নিহত হন মো. সুমন সিকদার। এ ঘটনায় তার মা মাসুমা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭৯ জনকে আসামি করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট রুবেলসহ কয়েকশ ছাত্র-জনতা সকাল ১১ টার দিকে আদাবর থানাধীন রিংরোড এলাকায় প্রতিবাদী মিছিল বের করে। এ সময় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতীলীগ, কৃষকলীগ, মৎসজীবী লীগের নেতাকর্মীরা গুলি চালায়। এতে রুবেল গুলিবিদ্ধ হয়। নিকটস্থ একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ২২ আগস্ট রাতে আদাবর থানায় মামলাটি করেন রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম।