25 C
Dhaka
Monday, December 23, 2024
[adinserter block="1"]

রাস্তার কারণে বিয়ে হয় না যে এলাকার মেয়েদের

বৃষ্টির পানি জমে বেহাল অবস্থা সড়কটির। কাদাযুক্ত ছোট বড় গর্তে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই সড়ক দিয়েই অতিকষ্টে যাতায়াত করছে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার গালিমপুর ও দক্ষিণ শিলমুড়ী ইউনিয়নের ছয় গ্রামের মানুষ। বেহাল যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে এই এলাকার মানুষদের সঙ্গে আত্মীয়তা করতে চান না অন্য এলাকার বাসিন্দারা।

সড়কটি উপজেলার গালিমপুর ও দক্ষিণ শিলমুড়ী ইউনিয়নের মধ্যবর্তী হওয়ার কারণে উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত গ্রামবাসী। সড়কের সিংহভাগ অংশ দক্ষিণ শীলমুড়ি ইউনিয়নের সীমানায় আর বাকি কিছু অংশ গালিমপুর ইউনিয়নের সীমানায়। মূলত এক রাস্তার দুই অভিভাবক থাকায় রাস্তাটি মেরামত হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

জানা গেছে, সড়কটি উপজেলার গালিমপুর ইউনিয়নের ঘোষ্পা গ্রাম থেকে দক্ষিণ শিলমুড়ি ইউনিয়নের শিয়ালোড়া, জোয়াগ হয়ে পাশের উত্তর শিলমুড়ি ইউনিয়ন ও একই ইউনিয়নের আলোকদিয়া গ্রাম, গোবিন্দপুর ও সুলতানপুরে মিলেছে।

আরো পড়ুন  অবশেষে গর্তে মিলল দুই খালাতো ভাইয়ের মরদেহ

প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়কের পুরোটার বেহাল দশা। বিশেষ করে বর্ষার মৌসুমে এই রাস্তা দিয়ে মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই কষ্টদায়ক।

এই সড়কের পাশেই ঘোষ্পা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিয়ালোড়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রায় ৪০০-৫০০ ছাত্রছাত্রী এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। একটু বৃষ্টিতেই ছাত্র-ছাত্রীদের ইউনিফর্ম নষ্ট হয়ে যায় এই সড়ক দিয়ে চলাচল করলে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছাড়াও সর্বস্তরের মানুষজনের যাতায়াত এই ঝুঁকিপূর্ণ সড়কটি দিয়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা মালেক বলেন, আমাদের গ্রামের মেয়েদের বিয়ে হয় না এই রাস্তার কারণে। অনেক বিয়ের প্রস্তাব ফিরে যায় শুধু এই রাস্তার জন্য। আমার এই বয়সে আমি একবার দেখছি মাটি ফেলতে এই রাস্তায়। এমপি ও আমাদের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন বৃষ্টির দিনে এই রাস্তাটি একবার দেখে যাবেন।

রাহেলা বেগম নামের একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আমি এখন ডাক্তার দেখিয়ে আসলাম। এই রাস্তা দিয়ে একজন রোগী কীভাবে বাড়ি যাবে আপনারাই বলেন? আমাদের চলাচলে বহু কষ্ট এই রাস্তাটি দিয়ে।

আরো পড়ুন  মিটারের ভেলকিবাজিতে বেকায়দায় সাধারণ মানুষ (ভিডিও)

হোসেন নামের স্থানীয় দোকানদার বলেন, আমার এই সার দোকানে একটু বৃষ্টি হলেই বাইরের কোনো লোক আসতে পারে না। এই রাস্তাটি গালিমপুর ইউনিয়ন এবং দক্ষিণ শীলমুড়ি ইউনিয়নের সংযোগস্থল। দুই ইউনিয়নের মধ্যবর্তী হওয়ার কারণেই এই রাস্তাটির কাজ হচ্ছে না।

দিদার নামের একজন পথচারী বলেন, আমি এই এলাকার জামাই। বৃষ্টির দিনে শ্বশুরবাড়িতে আসলে হাতে জুতা আর প্যান্ট উঠাতে হয় হাঁটু সমান। আমার বিয়ের পর ধরেই দেখি এই রাস্তার অবস্থা এমন।

এই বিষয়ে গালিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান কালবেলাকে বলেন, আমি চেয়ারম্যান পদে আছি দুই তিন মাস। আমি নিজে রাস্তাটা দেখতে যাব। আসলে আমি নিজেও জানি না ওই রাস্তার কতটুকু আমার ইউনিয়নে পড়েছে। তবে যতটুকু শুনেছি এ রাস্তাটি উভয় চেয়ারম্যান সমন্বয় করে সংস্কার করে। এই রাস্তার বেশিরভাগ অংশ পড়েছে দক্ষিণ শীলমুড়ির সীমানায়। যখন রাস্তা সংস্কারের সময় আসবে তখন পুরোটাই আমি করে দেব।

আরো পড়ুন  ২২ বছরের স্বামীর বাড়িতে ৪৩ বছর বয়সী স্ত্রীর অনশন

দক্ষিণ শীলমুড়ির ইউপি চেয়ারম্যান কালবেলাকে বলেন, ওই জায়গাটা ইউনিয়নের একবারে ভেতরে পড়েছে। বড় প্রকল্প এখানে আনা যায় না। তিন বছর চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। শীলমুড়ি থেকে যে রাস্তাটা জয়াগ গ্রামের ভেতর দিয়ে ঢুকছে, সেটা গত ২৩-২৪ অর্থবছরে এক কিলোমিটার পাকা করার বরাদ্দ আসে। ঠিকাদার আধা কিলোমিটার করেই এখান থেকে চলে যায় বড় গাড়ি ঢুকানো যায় না দেখে। এখন যেখানে যেখানে কাজ করা লাগবে গ্রামবাসীকে বলেন আমার কাছে স্থান আর জায়গার নাম লিখে অভিযোগ করতে। সলিংয়ের বরাদ্দ আসলে তখন আমি করে দেব।

সর্বশেষ সংবাদ