22 C
Dhaka
Monday, December 23, 2024
[adinserter block="1"]

‘পুলিশের ভূমিকা দেখে মনে হচ্ছে তারা আমার অপমৃত্যু রেকর্ড করার জন্য বসে আছে’

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, এই দেশে বঙ্গবন্ধুসহ পুরো পরিবারকে মেরে ফেলা হয়েছে, হবিগঞ্জের শাহ এএমএস কিবরিয়া মারা গেছেন। আমরা তো তাদের নিরাপত্তা দিতে পারিনি। আর আমার ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা দেখে মনে হচ্ছে- পুলিশ একটি অপমৃত্যু রেকর্ড করার জন্য বসে আছে।

রোববার (৩০ জুন) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। ব্যারিস্টার সুমন জানান, আমার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছি। এখন দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। মৃত্যুর ভয় আমি করি না। কিন্তু আমার এলাকার মানুষকে নিয়ে চিন্তা করি।

সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সংসদে থাকাকালীন আমার এলাকার যে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছেন তিনি আমাকে কল করে জানান, গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে। তাই বাড়ি আসার পর তার সঙ্গে যেন আমি একটু বসি।

পরে শুক্রবার বাড়ি যাওয়ার পর দুপুরে আমার সঙ্গে বসেছিলেন ওসি। তখন ওসি আমাকে একটি ম্যাসেজ দেখালেন। সেখানে ওসিকে একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি ২-৩ দিন কল করেছেন। কিন্তু কলটি আমলে না নেয়ায় ওই ব্যক্তি ওসিকে একটি ম্যাসেজ করে জানান, তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেতে চান। এছাড়া ম্যাসেজে দেখা গেছে, একটি কন্ট্রাক্ট কিলার গ্রুপ হায়ার করা হয়েছে। তারা বর্তমানে অ্যাক্টিভ।

আরো পড়ুন  ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করে মামলা তুলে নিতে চান না ড. ইউনূস’

তিনি বলেন, ওসির ফোন দিয়ে আমি পরে অজ্ঞাত সেই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলি। তখন অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি জানায়, তিনি নিজের পরিচয় এবং ঠিকানা দিতে চান না। এছাড়া তিনি নিজেও ওই কিলার গ্রুপের একজন সদস্য ছিলেন। যখন আমাকে হত্যার জন্য তার কাছে নাম আসে এবং সেই কাজ তাকে করতে হবে এমন নির্দেশনা আসে, তখন তিনি ওই কাজে অস্বীকৃতি জানান। কারণ, তার বাড়িও সিলেটে। তিনি আমার কাজকর্ম সম্পর্কে সব জানেন, তাই তিনি রাজি হননি বলেও আমাকে জানিয়েছেন।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ফোনকলে ওই ব্যক্তি জানান, আমি যেন আগামী ২-৩ দিন বাসা থেকে বের না হই। কিন্তু এর আগেও আমি মৌখিকভাবে এবং পিএসের মাধ্যমে হুমকি পেয়েছি। কিন্তু সেগুলো আমলে নেইনি। তবে এবার যখন ওসির মাধ্যমে এসেছে, তখন আমার কাছে মনে হয়েছে এবার সিরিয়াসভাবে আমলে নিতে হবে।

আরো পড়ুন  ‘জুলাই গণহত্যায় শেখ হাসিনার বিচার সরাসরি সম্প্রচার করা হবে’

তিনি জানান, ওই ঘটনার পর আমি শনিবার ঢাকায় চলে আসি। এরমধ্যে আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাও বলেছি। পরে আমি শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমি একজন সংসদ সদস্য। যখন আমার এলাকার ওসি কোনো এক মাধ্যমে জেনেছেন আমার লাইফ রিস্কে আছে, তখনই কিন্তু তার এসপি বা ডিআইজির সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। এটা কি সত্যই হুমকি নাকি ভুয়া সেটি আমার কাছে আসার আগেই তাদের তদন্ত করে দেখা উচিত ছিল। আমাকে কেন জিডি করতে হলো?

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন হলো- আমার থ্রেট তো আমি জানি না, আমার আগে জেনেছেন ওসি। এরপর এটা এসপি বা ডিআইজিকে জানানো দরকার ছিল এবং আমি জানার আগেই আমাকে প্রোটেকশন দেয়ার কথা ছিল। এরপর আমাকে জানাতে পারতেন যে, ওই থ্রেটটা (হুমকি) রিয়েল নাকি ফেইক। কিন্তু ওসি আমাকে বলেছেন, আমার জিডি করতে হলো। এখন তো আমার জীবনের নিরাপত্তা নিজেকেই দিতে হচ্ছে। আমি বুঝি না, এই রাষ্ট্রযন্ত্র আসলেই কি আমাকে বাঁচায় রাখতে চায় কি না। কারণ, আমি যেখানে জিডি করেছি বা পুলিশ বিভাগকে জানিয়েছি, তারাই তো আমার আগে এ ঘটনা জেনেছে।

আরো পড়ুন  কাস্টমস কমিশনার এনামুলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, এই দেশে বঙ্গবন্ধুসহ তার পুরো পরিবারকে মেরে ফেলা হয়েছে, হবিগঞ্জের শাহ এএমএস কিবরিয়া মারা গেছেন। আমরা তো তাদের নিরাপত্তা দিতে পারিনি। আর আমার ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা দেখে মনে হচ্ছে পুলিশ একটি অপমৃত্যু রেকর্ড করার জন্য বসে আছে।

সর্বশেষ সংবাদ