19 C
Dhaka
Monday, December 23, 2024
[adinserter block="1"]

বীমা কোম্পানিতে চাকরির নামে ভয়ংকর জঙ্গি রানা

নাম তার রানা শেখ ওরফে আমির হোসাইন। মার্শাল আর্টে ব্ল্যাক বেল্ট পেয়েছিলেন। ময়মনসিংহের ভালুকায় মাদ্রাসায় পড়াশোনা করার সময় জড়িয়েছিলেন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদে (হুজি)। ওই সময়ে আন-আর্মড কমব্যাট বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন। এসবের আড়ালে এই রানা শেখ ফরিদপুরে একটি বীমা প্রতিষ্ঠানের ইউনিট ব্যবস্থাপক হিসেবে চাকরি করছিলেন। তার পরিচয় ‘বীমা কর্মকর্তা’ হলেও তিনি এখন মূলত আরেক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ফরিদপুর অঞ্চলের সমন্বয়ক। দুই সহযোগীসহ তাকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি)।

ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, রানা শেখ শারক্বীয়ার হয়ে পাহাড়ি অঞ্চলে গিয়ে কুকি-চিন নামক বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গ্রুপের কাছে প্রশিক্ষণ নেন। সেখানে প্রশিক্ষণ নিতে আরও লোক পাঠিয়েছেন তিনি। মূলত বীমা কোম্পানির ব্যবস্থাপকের আড়ালে তিনি ফরিদপুর অঞ্চলে শারক্বীয়ার কর্মী সংগ্রহ করছিলেন।

আরো পড়ুন  সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু

গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন মশিউর রহমান ওরফে মিলন তালুকদার ও হাবিবুর রহমান। তাদের কাছ থেকে তিনটি স্মার্টফোন ও দুটি বাটনফোন উদ্ধার করা হয়েছে। স্মার্টফোনে পাহাড়ে তাদের প্রশিক্ষণের ভিডিও পাওয়া গেছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, গত সোমবার ডিবির লালবাগ বিভাগের সদস্যরা রাজধানীর কল্যাণপুর ও গাবতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) গোয়েন্দা তথ্য ও সহযোগিতায় এ অভিযান চালানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, জঙ্গি রানা শেখের গুরু হুজি নেতা ও ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া মাওলানা আবদুর রউফ। তার কাছে প্রশিক্ষণের জন্য ২০০২ সালে ময়মনসিংহে যান তিনি। ভালুকার একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করার পাশাপাশি সামরিক ও আন-আর্মড কমব্যাট বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন। ২০০৩ সালে বাবা, মামা, ভগ্নিপতিসহ মোট ১৮ জন সদস্য হুজি নেতা মাওলানা আবদুর রউফের সঙ্গে বৈঠকের সময় ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পুলিশের কাছে ধরা পড়েন। পরে ছাড়া পান। সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য তিনি তিন সদস্যকে বান্দরবানে কুকি-চিনের সন্ত্রাসীদের কাছে পাঠান।

আরো পড়ুন  যেসব জেলায় দুপুর ১টার মধ্যে ঝড়ের আশঙ্কা

গ্রেপ্তার মিলন তালুকদার প্রথমে ইসলামিক শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সদস্য ছিলেন। ২০০২-০৩ সালে ময়মনসিংহে হুজি নেতা আবদুর রউফের মাদ্রাসায় সামরিক ও আন-আর্মড কমব্যাট বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন। ২০১৩ সালে হুজি নেতাদের সঙ্গে গ্রেনেডসহ ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার হয়ে সাড়ে ৪ বছর সাজা খাটেন। পাহাড়ি বৈরী পরিবেশে কমান্ডো হিসেবে টিকে থাকা, পিটি-প্যারেড শেখা, আন-আর্মড কমব্যাট, অ্যাসল্ট রাইফেল চালানো, বোমা তৈরি এবং এ-সংক্রান্ত বিষয়ে বান্দরবানে কুকি-চিনের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেন। গ্রেপ্তার হাবিবুর রহমান দলের নতুন সদস্য। তিনি প্রশিক্ষণ নিতে বান্দরবানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

আরো পড়ুন  আজ ঘরে ফিরছেন এমভি আবদুল্লাহর সেই ২৩ নাবিক

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ডিবির লালবাগ বিভাগের ডিসি (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পাওয়া) মশিউর রহমান কালবেলাকে বলেন, শারক্বীয়ার জঙ্গিরা পার্বত্য জেলার বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছিল। শুরুতেই ডিএমপির সিটিটিসি ও র্যাব টানা অভিযান চালিয়ে তাদের অনেক সদস্য ও শীর্ষ নেতাকে আইনের আওতায় নিয়েছে।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শারক্বীয়ার ভবিষ্যৎ কার্যক্রম ও পরিকল্পনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ সংবাদ