পদ্মা সেতু চালুর পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ঈদে ঘরমুখো চাপ কমলেও যারা এ পথে বাড়ি যাবেন, তাদের ভোগান্তি কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন জানান, ঈদে যাত্রী ও যানবাহন নির্বিঘ্নে পারাপারের জন্য এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সাতটি ঘাটের মধ্যে তিনটি ঘাট প্রস্তুত হয়েছে।
পদ্মা সেতু চালুর আগে দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার ছিল দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ। দেশের ২১ জেলার লাখ লাখ মানুষের যাতায়াতের এ পথে ফেরি পারাপারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকে ভোগান্তির শিকার হতেন চালক ও যাত্রীরা।
ঈদের সময় সেই দুর্ভোগ বেড়ে যেত কয়েকগুণ। পদ্মা সেতু চালুর পর কমেছে ভোগান্তি; স্বস্তি ফিরেছে ঘাট দিয়ে চলাচলকারীদের।
পদ্মা সেতু চালুর পর বেশির ভাগ যানবাহন সেতু ব্যবহার করলেও কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, যশোর, মাগুরা, ফরিদপুর ও রাজবাড়ী জেলার বেশকিছু যাত্রীবাহী পরিবহন ও পণ্যবাহী ট্রাক এখনও এই নৌ-পথ ব্যবহার করেন।
সাধারণ সময়ে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার যানবাহন পারাপার হলেও ঈদের আগে তা বেড়ে যায় দ্বিগুণ। তবে ঈদযাত্রায় ফেরিঘাটে ভোগান্তি হবে না বলে আশা চালক ও যাত্রীদের।
ট্রাকের চালক ইসমাইল হোসেন বলেন, “পদ্মা সেতু চালুর পর ভোগান্তি নেই ফেরিঘাটে। আগে অনেক ভোগান্তি ছিল; তিন-চার ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে ফেরিতে উঠার জন্য। এখন গাড়ির চাপ নেই বললেই চলে।
“গেল ঈদে ভোগান্তি ছাড়া পারাপার হতে পেরেছি। এবারও আশা করছি, কোনো ভোগান্তি হবে না এই নৌপথে।”
জাফর খান নামের আরেক ট্রাকচালক বলেন, “এবার ঈদে অধিকাংশ গাড়ি যাবে পদ্মা সেতু দিয়ে। ফলে স্বাভাবিক থাকবে ফেরিঘাট। এই পথে গাড়ির চাপ কম থাকায় এখন ফেরিই বসে থাকে গাড়ির জন্য। গাড়ির চাপ কমে যাওয়ায় আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে; ভোগান্তি ছাড়াই পারাপার হতে পারছি।”
রাজু ইসলাম নামে ঢাকামুখী এক যাত্রী বলেন, “গত দুই ঈদে কোনো ভোগান্তি ছিল না। এবারও ফেরি সার্ভিস নিরবচ্ছিন্ন থাকলে ভোগান্তি থাকবে না বলে আশা করছি।”
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, “তিনটি ঘাটের পাশাপাশি ১৫টি ফেরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া যানবাহনের বাড়তি চাপ কমাতে ঈদের তিন দিন আগে ও পরে বন্ধ থাকবে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার। আশা করছি, ঈদে ঘরমুখো মানুষ স্বস্তিতেই পারাপার হতে পারবেন।”
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ঈদে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে নদী পার হয়ে দৌলতদিয়ায় এসে যারা আবার যাত্রা শুরু করবে, তাদের জন্য আমাদের প্রস্তুতি বেশি। কারণ ওই সময়টা অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যায়।
ছিনতাইকারী ঠেকাতে ঘাট এলাকায় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানান তিনি।