চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দুই জনগোষ্ঠী সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠে ভারতের মণিপুর রাজ্যের পরিস্থিতি। প্রায় চার মাস শান্ত থাকার পর এবার আবারও অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে মণিপুর। গেল কয়েকদিনে দফায় দফায় গুলি বিনিময়, বোমা বিস্ফোরণ, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, মণিপুর রাইফেলসের দুটি ব্যাটেলিয়নের অস্ত্রশস্ত্র লুটের চেষ্টাসহ একাধিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। শুধু তাই নয় বিক্ষোভকারীরা ভারতের পতাকা নামিয়ে উড়িয়েছেন সাতরঙা পতাকা।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সম্প্রতি ইম্ফলের কৌত্রুক এলাকায় সশস্ত্র আক্রমণে এক মহিলাসহ দুজনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মণিপুরের পরিস্থিতি। গত সপ্তাহে মইরাংয়ে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ উঠে। এই ঘটনায় এক বেসামরিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, সাম্প্রতিক সংঘর্ষে অত্যাধুনিক ড্রোন ও আরপিজি ব্যবহার করা হয়েছে। এ ধরনের অস্ত্র সাধারণত যুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হয়। গেল ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মণিপুর রাইফেলসের দুটি ব্যাটেলিয়নের অস্ত্রাগার লুট করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেখানে মোতায়েন যৌথ বাহিনী তা মোকাবিলা করে।
এমন পরিস্থিতিতে মণিপুরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে কয়েকদিন। বহু এলাকায় বন্ধ রয়েছে দোকানবাজারও। এদিকে অভিযোগ রয়েছে সশস্ত্র কুকিদের কাছে যে অস্ত্র রয়েছে তা দিয়ে তারা ২০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করতে পারে। যদিও কুকিদের পক্ষ থেকে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের কথা অস্বীকার করা হয়েছে। এ ছাড়া ড্রোন হামলা ঠেকাতে সেখানে অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, সাম্প্রতিক ঘটনায় যে ধরনের অত্যাধুনিক হাতিয়ার ব্যবহার করা হচ্ছে তা আশঙ্কাজনক। সাধারণত কুকিরা এমন হাতিয়ার ব্যবহার করে না। দুই সম্প্রদায়ের সশস্ত্র গোষ্ঠীকেই এই হাতিয়ার ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে যা আরও উদ্বেগজনক। এই হাতিয়ারের পেছনে বড় কোনো শক্তি থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন অনেকে।